খুলনা | শুক্রবার | ০৩ মে ২০২৪ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১

অভিযান নেই অনুমোদনহীন কেন্দ্রে : ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস অধিদপ্তরের

খুলনায় শর্ত মানছে না বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলো

এন আই রকি |
১২:৫৩ এ.এম | ২৮ জুন ২০২১

খুলনায় লাইসেন্সপ্রাপ্ত বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলো শর্ত না মেনেই পরিচালিত হচ্ছে। পাশাপাশি সরকারের অনুমোদন ছাড়াই গড়ে উঠেছে অনুমোদনহীন একাধিক কেন্দ্র। সরেজমিনে খুলনার লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রগতি মানসিক রোগ ও মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র এবং অশ্র“ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে গিয়ে কোন ডাক্তার পাওয়া যায়নি। এমনকি নেই কোন মনোচিকিৎসক, নেই ফায়ার সার্ভিস প্রোটেকশন। এছাড়া নগরীর খালিশপুর ও লবণচরা থানা এলাকায় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র পরিচালিত হলেও তার কোন সরকারি অনুমোদন নেই। 
এদিকে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলো দেখভালের দায়িত্বে যারা আছেন তাদের দাবি, লাইসেন্সপ্রাপ্তগুলো তারা নিয়মিত তদারকি করছেন। আর অনুমোদন নেই এমন খবর থাকলে তারা ব্যবস্থা নেবেন। ইতোমধ্যে নানান অভিযোগে নিউ অশ্র“ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। 
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, খুলনায় লাইসেন্সপ্রাপ্ত বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র রয়েছে ৭টি। এগুলো হলো খুলনা মুক্তিসেবা সংস্থা, প্রগতি মানসিক রোগ ও মাদকসক্তি নিরাময় কেন্দ্র, মুনড্রপস মাদকাসক্তি চিকিৎসা কেন্দ্র, নিউপথ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র, সানমুন মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র, অশ্র“ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র এবং নিউ উদয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র। এর বাইরে যে সকল মাদকসক্তি নিরাময় কেন্দ্র রয়েছে, এগুলোর সরকারিভাবে কোন অনুমোদন নেই। যারা অবৈধভাবে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র পরিচালনা করছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া অনুমোদিত লাইসেন্সগুলোতে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর নিয়মিত তদারকি করেন।
সরেজমিনে নগরীর একাধিক লাইসেন্সপ্রাপ্ত মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে গিয়ে কোন ডাক্তার দেখা যায়নি। তবে তাদের দাবি ডাক্তার পাশেই আছে। প্রয়োজন হলেই আমরা ডেকে নিই। এছাড়া মাসব্যাপী ডাক্তার এত টাকা দিয়ে রাখাও সম্ভব নয় বলে জানান প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। এছাড়া মনোচিকিৎসকের নামের তালিকা সাঁটানো থাকলেও বাস্তবে নেই। সবই প্রয়োজন হলে ডাকা হয়। তবে ডিপ্লোমা পাস করা নার্সের দেখা মিললেও অগ্নিনির্বাপক কোন সুব্যবস্থা নেই অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোতে। 
আরও জানা যায়, যারাই মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে আসেন, তারাই সুস্থ হয়েই আরেকটি নিরাময় কেন্দ্র তৈরি করে। কোন অনুমোদন ছাড়াই এগুলো নগরীতে গড়ে উঠেছে। এছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানে কাউন্সিলিং করার জন্য নির্দিষ্ট কোন লোক নেই। পূর্বে যারা মাদকাসক্ত ছিল তাদের দাবি তারা ভাল হয়ে গিয়েছে এবং তারাই নতুন রোগীদের কাউন্সিলিং করেন। এছাড়া রোগীদের খরচের জন্য নির্দিষ্ট কোন ফি সরকারি ভাবে নির্ধারণ না থাকায় একেকটি প্রতিষ্ঠান ইচ্ছামত রোগীদের স্বজনদের কাছ থেকে লাগাম ছাড়া ফি আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলোতেই মাদক সেবনে এবং রোগীদের ওপর অমানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তো আছেই। সব মিলিয়ে যে সকল শর্ত সাপেক্ষে সরকারের কাছ থেকে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলোর জন্য অনুমোদন নেওয়া হয় তার বেশির ভাগই না মেনেই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা হচ্ছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের খুলনার উপ-পরিচালক মোঃ রকিবুজ্জামান বলেন, লাইসেন্সপ্রাপ্ত বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে এমবিবিএস ডাক্তার, মনোচিকিৎসক থাকবে। এছাড়া কোন রোগীকে টর্চার করার সুযোগ নেই। খুলনার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে। অবৈধ কোন নিরাময় কেন্দ্র থাকলে অথবা রোগীদের টর্চার করার অভিযোগ থাকলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রিন্ট

আরও খবর